জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রাগৈতিহাসিক যুগে পেঙ্গুইনদের পূর্বপুরুষরাও এখনকার পেঙ্গুইনদের মত দক্ষিণ গোলার্ধের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করতো। পেঙ্গুইনদের প্রথম জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি নিউজিল্যান্ডে। প্রায় চার কোটি বছরের পুরানো এই পেঙ্গুইনেরা লম্বায় ছিল চার থেকে পাঁচ ফুট। অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় পেঙ্গুইনদের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে মায়োসিন যুগের অর্থাৎ প্রায় এক থেকে আড়াই কোটি বছর আগের সময়ের। এদের কারও কারও দৈর্ঘ্য ছিল সাড়ে চার থেকে পাঁচ ফুট আর ওজন ছিল নব্বই থেকে একশো কিলোগ্রাম। লম্বায় প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট আর ওজনে একইরকমের পেঙ্গুইনের জীবাশ্মও পাওয়া গেছে সেই সময়কার। এইসব পেঙ্গুইনদের হারিয়ে যাওয়ার পিছনে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সীল ও ছোট তিমিদের বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন অনেক বিজ্ঞানী। একই খাবারের জন্য প্রতিযোগিতায় সীল ও তিমিদের কাছে হেরে যাওয়া এবং সীল ও তিমিদের স্বাভাবিক খাদ্যের তালিকায় পেঙ্গুইনরা অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কারণেই তাদের অবলুপ্তি ঘটেছিল বলে বিশ্বাস করেন অনেক বিজ্ঞানী।
পর্তুগীজ অভিযাত্রী বার্থালমিউ ১৪৮৭-৮৮ সালে প্রথম পেঙ্গুইনদের দেখতে পান দক্ষিণ আফ্রিকার কেভ অফ গুড হোপের কাছ। এরপরে আরেক পর্তুগীজ অভিযাত্রী ভাস্কো-ডা-গামা ১৪৯৭ সালে আফ্রিকার দক্ষিণ উপকূলে পেঙ্গুইনদের দেখতে পাওয়ার কথা সরকারি ভাবে লিপিবদ্ধ করেন। ১৫২০ সালে স্প্যানিশ অভিযাত্রী ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে পেঙ্গুইনদের দেখতে পাওয়ার কথা জানান। দু:সাহসী নাবিক ক্যাপ্টেন কুক ১৭৭২ থেকে ১৭৭৫ সাল পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ পরিক্রমনের সময়ে পেঙ্গুইনের ডাক শুনতে পেলেও তাদের দেখা পান নি। এর অনেক পরে বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ডিসকভারির দ্বিতীয় অভিযানের সময় রবার্ট স্কট ও তাঁর দলবল আন্টার্কটিকায় পেঙ্গুইনদের আবিষ্কার করেন। মোট আঠারো ধরণের পেঙ্গুইনদের মধ্যে অ্যান্টার্কটিকার আধিবাসী চিনষ্ট্রাপ পেঙ্গুইনদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। হিসাবে দেখা গেছে এদের মোট সংখ্যা প্রায় এক কোটি ত্রিশ লক্ষ্য।
প্রাপ্ত বয়স্ক পেঙ্গুইনদের সকলেরই বুকের দিকটা সাদা ধবধবে আর পিঠ ও ডানা দুটি কালো। এ কারণে উপর থেকে দেখলে পেঙ্গুইনদের পিঠকে সমুদ্রের গাঢ় রঙের থেকে আলাদা করা মুশকিল হয়ে পড়ে। তেমনই সমুদ্রের তলার দিক থেকে দেখলে পেঙ্গুইনদের সাদা দিককেও সমুদ্রের ভিতর দিকের রঙ থেকে আলাদা করা যায় না। এই কারণে সমুদ্রে থাকা কালিন সীল, তিমি ও অন্যান্য শিকারী সামুদ্রিক প্রাণিদের পেঙ্গুইনদের অবস্থান বুঝতে অসুবিধা হয়।
সাধারণভাবে পেঙ্গুইনদের রঙ এককরম মনে হলেও, স্বতন্ত্রচিহ্ন এবং বিশেষ রঙ দেখে বিভিন্ন ধরণের পেঙ্গুইনদের আলাদা করে চিনে নেওয়া যায়। এম্পেরর পেঙ্গুইনদের চেনা যায় তাদের মাথা, থুতনি ও গলার কালো রঙ আর কানের উপর হলুদ রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখে। অন্যদিকে কিং পেঙ্গুইনদের কান থেকে বুকের উপর দিক পর্যন্ত কাটাকাটা কমলা রঙের দাগ থাকে যা দেখে তাদের চিনে নেওয়া যায়। অ্যাডেলি পেঙ্গুইনদের মাথাটা কালো হলেও তাদের সকলের থেকে আলাদা করা যায় প্রজননের সময় তাদের চোখের চারিদিকে তৈরী হওয়া সাদা বৃত্তাকার দাগ দেখে। জেন্টো পেঙ্গুইনদের আবার মাথাটা কালো হলেও চোখের পাতাগুলি হয় সাদা এবং দুটি চোখেরই উপর দিকে থাকে ত্রিভুজাকৃতি সাদা দাগ। সাধারণতঃ এই দাগ কপাল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। চিনস্ট্রাপ পেঙ্গুইনের মাথাটি কালো হলেও মুখোবয়বটি কিন্তু সাদা। এই সাদা মুখের থুতনি পর্যন্ত কালোদাগ এদের অন্যদের থেকে আলাদা করে দেয়। মাথার পাশে ঝুঁটির মত হলুদ কিংবা কমলা রঙের পালকগুচ্ছ দেখে সহজেই চিনতে পারা যায় রকহপার আর ম্যাকারনি পেঙ্গুইনদের। এদের চোখের রঙও আলাদা। লাল রঙের। হলুদ চোখের পেঙ্গুইনদের আবার বৈশিষ্ট হল তাদের এই চোখ আর মাথার গাঢ় রঙের উপর হালকা হলুদ রঙের ডোরাকাটা দাগ। ফেরারি পেঙ্গুইনদের চেনার উপায় হল এদের কালো পাখনা এবং থুতনি ও বুকের সাদা রঙ। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের পেঙ্গুইন যেমন ম্যাগলানিক আর হামবোল্টদের আবার বৈশিষ্ট্য হল মুখমন্ডলের পালকহীন মোটা অংশ আর সাদা বুকের উপর আড়াআড়ি একটি কিংবা দুটি কালো ডোরাকাটা দাগ। পেঙ্গুইনদের আবার বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠতে সময় লাগে এক বছর কিংবা কোনও কোনও সময় তার থেকেও বেশি।
রঙ যাই হোক না কেন, সব ধরনের পেঙ্গুইনদেরই মাথাটা কিন্তু বড় আর গলদেশ খুব ছোট আকারের হয়। শরীরটিও সকলের লম্বাটে ধরণের। পেঙ্গুইনদের আবার গোঁজের মত ছোট একটি লেজও আছে। সব মিলিয়ে পেঙ্গুইনদের আকৃতি এমন যে অবাধে চলাফেরা করতে এদের কোন অসুবিধা হয় না। শরীরের খানিকটা পিছন দিক করে থাকা জোড়াকৃতি পা পেঙ্গুইনদের মাটিতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে এবং চলাফেরা করতে সাহায্য করে। তাদের এই পদযুগল আকারে ছোট হলেও শরীর বয়ে বেড়ানোর পক্ষে বেশ শক্তিশালী। পেঙ্গুইনের চলে ফিরে বেড়ানোটা কিন্তু বেশ চিত্তাকর্ষক। ছোট পদক্ষেপে হেলতে দুলতে অত্যন্ত ধীরগতিতে ডাঙায় হেঁটে চলে বেড়ায় এরা। খাঁড়া জায়গায় চড়বার সময় এরা চক্ষু আর লেজের সাহায্য নেয়। লাফিয়ে উঁচু জায়গায় উঠতেও এরা খুব পারদর্শী। কোন কোন সময় জল থেকে লাফিয়ে সাত-আট ফুট উঁচু ডাঙায় দাঁড়িয়ে পড়তে দেখা যায় পেঙ্গুইনদের। হাঁটার ব্যাপারে অত্যন্ত ধীর গতি সম্পন্ন হলেও পেটের উপর ভর করে ঘষে ঘষে শরীরকে বরফের উপর দিয়ে অনেক দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে এরা। চলাফেরায় ডাঙার থেকে জলে অনেক দ্রুত আর সাবলীল পেঙ্গুইনরা। পেঙ্গুইনরা সাঁতার কাটার সময় তাদের পাখনাকে দাঁড় হিসাবে ব্যবহার করে। পাখিরা যেমন হাওয়া টেনে এগিয়ে যেতে পাখনাকে ব্যবহার করে, পেঙ্গুইনরাও তাদের পাখনাকে জলের মধ্যে এগিয়ে যাবার জন্য সেভাবে ব্যবহার করে। এরা সাঁতার কাটতে ডানা দুটি ব্যবহার করলেও দিক পরিবর্তনের জন্য কিন্তু এরা পা কে ব্যবহার করে।
কম শক্তি ক্ষয়ের জন্য পেঙ্গুইনরা জলের মধ্যে ডুবে সাঁতার দেওয়া পছন্দ করলেও, অক্সিজেন নেওয়ার জন্য মাঝেমাঝে তাদের মাথা জলের উপর তুলতে হয়। এ ব্যাপারে তারা শুশুকের মত জলে ডুব দেয় আর ওঠে। নিঃশ্বাস নেওয়া ছাড়া আরেকটি কারণেও পেঙ্গুইনদের সমুদ্রের জলের উপরের স্তরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। পেঙ্গুইনরা তাদের খাবার তালিকায় যেসব সামুদ্রিক প্রাণিদের রেখেছে জলের উপরিভাগেই তাদের দর্শন মেলে।
পেঙ্গুইনদের প্রধান খাদ্য হল আন্টার্কটিকার কমলা রঙের চিংড়ি ক্রিল আর বিভিন্ন ধরণের মাছ। এম্পেরর এবং কিং পেঙ্গুইনরা কিন্তু ক্রিলের থেকে মাছ খেতে বেশি ভালবাসে। অ্যাডেলি পেঙ্গুইনদের আবার পছন্দ হল ছোট ক্রিল, অন্যদিকে চিনষ্ট্রাপ পেঙ্গুইনদের প্রথম পছন্দ হল বড় ক্রিল। অ্যান্টার্কটিকার উত্তরের দিকের পেঙ্গুইনদের প্রথম পছন্দ হল ক্রিল। খাবার শিকার করবার জন্য পেঙ্গুইনরাও বহুল পরিমাণে দৃষ্টিশক্তির উপর নির্ভর করে। চঞ্চুর সাহায্যে পেঙ্গুইনরা খাবার ধরে গিলে খায়।
সকলেরই একটি ব্যাপারে কৌতূহল আছে। অ্যান্টার্কটিকার ভয়াবহ শীতে কিভাবে বেঁচে থাকে এরা? এ ব্যাপারে পেঙ্গুইনদের সাহায্য করে তাদের দেহের শক্ত আঁশের মত পালক যা সূর্যের আলোয় ঝকঝকে করে। এই পালকগুলি আবার বিশেষ ধরণের। ছোট কিন্তু চওড়া। এগুলি আবার এমন আঁটো সাঁটোভাবে থাকে যাতে ঠান্ডা জল কিংবা হাওয়া কোনমতেই শরীরের সংস্পর্শে আসতে পারে না। পেঙ্গুইনদের পালকের সংখ্যাও অন্যান্য পাখিদের তুলনায় অনেক বেশী। প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে প্রায় সত্তরটি পালক থাকে। এদের দেহে। এই ঘন পালকের স্তর এমনভাবে পালকের মধ্যে হাওয়ার স্তর তৈরী করে যা ভেদ করে ঠান্ডা হাওয়া শরীরের গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। এদের গায়ের চামড়ার তলায় পুরু চর্বিও শীতের হাত থেকে বাঁচতে এদের সাহায্য করে। পিঠের দিকের কালো রঙও সূর্যের তাপ শুষে নিয়ে পেঙ্গুইনদের শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে।
এসব থাকা সত্ত্বেও ঠান্ডা অসহ্য হলে এরা ঘন হয়ে জড়াজড়ি করে বসে, পরস্পরের গায়ের উত্তাপে নিজেদের গরম রাখতে। খানিক সময় বাদে বাইরের দিকে থাকা পাখিরা ভিতর দিকে থাকা পাখিদের সঙ্গে জায়গা বদল করে যাতে এক নাগাড়ে বাইরে থাকার ফলে ঠান্ডায় কেউ কাবু না হয়ে পড়ে। নিজেদের মধ্যে এই বোঝাপড়া পেঙ্গুইনদের এক সামাজিক প্রাণির স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি আরও বোঝা যায় মা-বাবা হিসাবে সন্তানদের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা দেখলে।
এম্পেরর পেঙ্গুইনরা ডিম দেয় ঘোর শীতকালে যখন তাপমাত্রা শূন্যের নীচে তিরিশ-চল্লিশ ডিগ্রীর কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে। এসময়ে অ্যান্টার্কটিকা সংলগ্ন সমস্ত সমুদ্রের জল জমে যায়। সমুদ্রের জমে যাওয়া এইবরফের উপরেই মা পেঙ্গুইন মাত্র একটি ডিম দেয়। বাবা পেঙ্গুইন সযত্নে সেই বড়সড় ডিমটি নিজের পায়ের উপর নিয়ে পেট দিয়ে ঢেকে বসে তার উপর তা দেয় দুমাস ধরে। এই সময় দরকার হলে ডিমটি সুদ্ধই হাঁটে বাবা পেঙ্গুইনরা যাতে ডিমটি বরফের উপর পড়ে গিয়ে ঠান্ডায় জমে নষ্ট না হয়ে যায়। অ্যান্টার্কটিকার দীর্ঘ রাত্রির অন্ধকারে ডিম নিয়ে না খেয়ে দেয়ে বসে থাকে দুমাস ধরে তারা। এরফলে এদের ওজন প্রায় কমে যায় অর্ধেক। এই দুমাস মা পেঙ্গুইনরা যায় সমুদ্রে খেয়েদেয়ে মোটা হয়ে আসতে। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনোর আগেই তারা ফিরে আসে নিজেদের জুড়ির কাছে। ডিম ফুটলে মা পেঙ্গুইনরা বাচ্চাকে নিজের দু পায়ে নিয়ে নেয় আর নিজের আধখাওয়া খাবার গলা থেকে বার করে খাওয়ায়। ঐ সময় বাবা পেঙ্গুইনরা চলে যায় সমুদ্রে খাবার সংগ্রহ করতে। বাচ্চা এম্পেরর পেঙ্গুইনরা বড় হয় খুব আস্তে আস্তে। দীর্ঘ শৈশবের প্রথম দু-তিন মাস প্রচন্ড শীতের সময়টা তারা কাটিয়ে দেয় মায়ের কোলে। পরের শীতকাল আসবার আগেই শীতকে রোখার মত চর্বি এবং পালক তৈরি হয়ে যায় তাদের। এম্পেরর শিশুর বয়স দুমাস হলেই বাবা মা দুজনেই যায় সমুদ্রে খাবার সংগ্রহ করতে। এ সময় বাচ্চারা নিজেদের মধ্যে জড়াজড়ি করে ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই চালায়। যদি কোন পেঙ্গুইন খাবার সংগ্রহে না যায়, তবে নিজেদের গায়ের উত্তাপ দিয়ে বাচ্চাদের সাহায্য করে তারা। অ্যাডেলি পেঙ্গুইনরা ডিম দেওয়ার সময় হল কুমেরুর গ্রীষ্মকাল। ডিম দেওয়ার জন্য অ্যাডেলি পেঙ্গুইনদের দরকার লাগে পাথুরে জমির। সেখানে তারা ছোট ছোট নুড়ি সংগ্রহ করে বাসা বানায় ডিম দেওয়ার জন্য। সেগুলিকে রুকারি বলে।
শান্ত এই প্রাণীরা খুবই মিশুকে। এরা মানুষকে একেবারেই ভয় পায় না। নিজেদের মধ্যে এরা অবশ্য গালগল্প, পরস্পরকে আদর, ডানা ধরাধরি করে হাঁটা এমন কি ঝগড়াও করে। এদের ঝগড়া করবার ভঙ্গিটি খুবই আকর্ষণীয়। পরস্পরের দিকে গলা বাড়িয়ে ধেয়ে গিয়ে মুখ কাছাকাছি হলে আকাশের দিকে মুখ তুলে এরা চীৎকার করে ঝগড়ার সময়।
পেঙ্গুইনরা নিজেদের মধ্যে সংবাদ আদান প্রদান করে বিভিন্ন ধরণের চীৎকারের মাধ্যমে। এর মধ্যে তিন ধরণের চীৎকার প্রধান। এদের এক ধরণের চীৎকার এক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায়। সমুদ্রে নিজেদের এলাকার অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য পেঙ্গুইনরা এই ধরণের ডাক দেয়। নিজেদের আলাদা পরিচিতি বোঝাবার জন্য এরা আরেক ধরণের ডাক দেয়। অন্য এক ধরণের চীৎকার পেঙ্গুইনরা করে বিপদের গন্ধ পেলে অন্য সকলকে সতর্ক করার জন্য। এদের বিপদ আসে সাধারণতঃ সমুদ্রের সিংহ, সীল, হাঙর এবং খুনি তিমিদের কাছ থেকে। প্রতি বছর ভাল সংখ্যক পেঙ্গুইনদের প্রাণ দিতে হয় এইসব আক্রমণে। এছাড়া শীতের সময় খাদ্যের অভাবে এবং প্রচন্ড শীতের দাপটে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ শিশু পেঙ্গুইবের মৃত্যু ঘটে। এসব থেকে রক্ষা পেলে পেঙ্গুইনরা পনেরো থেকে কুড়ি বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
প্রাণী হিসাবে পেঙ্গুইনরা সারা পৃথিবীতেই খুব জনপ্রিয়। এদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বহু চলচ্চিত্র আর গল্প। অনেক কার্টুন আর তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছে এদের নিয়ে। ১৯৮৬ সালে সিলভিও ম্যাজ্জোলার পেঙ্গুইনদের নিয়ে তৈরি নাটক ‘পিঙ্গু’ বহুদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে সম্প্রচারিত হয়েছিল দূরদর্শনে। জনপ্রিয়ও হয়েছিল খুব। কে না জানে ‘পেঙ্গুইন’ নামের প্রকাশক সংস্থার কথা। এসব শুনে তোমাদেরও নিশ্চয় এদের দেখবার প্রবল একটা ইচ্ছা হচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে এদের দেখতে হলে যেতে হবে অনেক দূরে দক্ষিণ মেরুর দিকে। এর জন্য যেমন তোমাকে হতে হবে সাহসী, তেমনই হতে হবে পরিশ্রমী স্লেজ টেনে নিয়ে যাবার জন্য। এমনটা হতে পারলে অবশ্য মিষ্টি এই প্রাণীদের দেখা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত হিসাবে হয়তো পেয়ে যেতে পারো পেঙ্গুইনের একটি ডিম, অবশ্য তা যদি হয় তোমার আকাঙ্খার বস্তু।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য