ডিজিটাল তথ্যে ভরে গেছে পৃথিবী। যার পরিমাণ প্রায় তিন হাজার বিলিয়ন বিলিয়ন বাইটস। প্রতিনিয়ত এতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য। এ তথ্যগুলো সংরক্ষণের কাজে যারা নিয়োজিত তাদের জন্য কাজটা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন তথ্য জমিয়ে রাখার জন্য হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে যা অত্যন্ত মূল্যবান এবং এর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রয়োজন হয়। বিদ্যুতের সাহায্য ছাড়াই ম্যাগনেটিক টেপে তথ্য জমিয়ে রাখা যায় কিন্তু এই টেপ এক দশকের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। জীববিজ্ঞানে তথ্য জমিয়ে রাখার এ সমস্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কারণ হচ্ছে বিজ্ঞানের এই শাখায় তৈরি হয়েছে তথ্যের এক বিশাল ভান্ডার । ডিএনএ সিকোয়েন্স গুলো ও এর মধ্যে আছে।
গঠনগত দিক দিয়ে ডিএনএ তে থাকা তথ্যগুলো অবিকৃত ভাবে থাকতে পারে বছরের পর বছর। প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রাণীদেহের ধ্বংসাবশেষ থেকে ডিএনএ আইসোলেশান করলেও তার জেনেটিক গঠন সম্পর্কিত তথ্যসমূহ নির্ভূলভাবে জানা যায়। তাই ডিজিটাল তথ্যকে যদি ডিএনএ কোডে পরিবর্তিত করা যায় তাহলে অল্প জায়গায় অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। এর পরিবহন এবং সংরক্ষণ দুটোই খুব সহজ।
কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যবহারে একটি অসুবিধা হচ্ছে ডিএনএ রিড করা যতটা সহজ রাইট করা অতটা সহজ নয়। আর এটাই তথ্য সংরক্ষণাগার হিসেবে ডিএনএ ব্যবহারের পথে প্রধাণ বাধা। এক্ষেত্রে দুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। প্রথমত, প্রচলিত পদ্ধতিতে ডিএনএ তৈরি করতে গেলে ছোট ছোট সুত্রক তৈরি করা যায়। দ্বিতীয়ত, রিডিং এবং রাইটিং দুইক্ষেত্রেই ভুলের সম্ভাবনা থাকে বিশেষ করে যেখানে পরপর একই ডিএনএ লেটার থাকে। ইএমবিএল-ইবিআই এর বিজ্ঞানীরা এমন কোড তৈরি করার কথা ঘোষণা করেছেন যে তাতে দুটি সমস্যারই সমাধান হবে।
নতুন পদ্ধতিতে এনকোডেড তথ্য থেকে ডিএনএ সংশ্লেষণ করতে হয়। ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক একটি সংস্থা Agilent Technologies, Inc এ কাজে সাহায্য করেছে।
ইএমবিএল-ইবিআই এর গবেষক ইয়ান বিরনি এবং নিক গোল্ডম্যান তাদেরকে মার্টিন লুথার কিং এর বিখ্যাত ভাষণ “আমার একটা স্বপ্ন আছে” এর এমপিথ্রি, ইএমবিএল-ইবিআই এর ছবির জেপিজি ভার্সন,ওয়াটসন ও ক্রিকের সেমিনার পেপার “নিউক্লিক এসিডের আণবিক গঠন” এর পিডিএফ, শেক্সপিয়ারের সনেটসমূহের টেক্সট ফাইল এবং এনকোডিং বর্ণনা করে একটি ফাইলের এনকোডেড সংকলন পাঠান। Agilent ওয়েব থেকে ফাইলগুলো ডাউনলোড করে এবং সেই অনুযায়ী হাজার হাজার ডিএনএ সূত্র সংশ্লেষণ করে। সব মিলিয়ে সেটা দেখা যায় এক কণা ধূলোর সমান। Agilent একে ইএমবিএল-ইবিআই এ পাঠায় যেখানে গবেষকরা ডিএনএ সিকোয়েন্স করে নির্ভুলভাবে ফাইলগুলোকে ডিকোড করে।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য