Blogger Widgets

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানকে জনপ্রিয়করনের আন্দোলন

বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তার বিষয়বস্তু বের করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট উপকরণ সমূহ ব্যবহার করেন। কিন্তু তার সিংহ ভাগই ইংলিশ বা অন্যান্য ভাষায় লেখার দরুন সাধারণ বাংলা ভাষী মানুষ সেই সকল তথ্য এবং উন্নতি সম্পর্কে জানার থেকে অনেক পিছিয়ে। তাদের কে এই বিজ্ঞান ও নানা প্রযুক্তিক সম্পর্কে জানানোর জন্যই কৌতূহল।

বিজ্ঞান এর সাথে পড়ার আনন্দ যেখানে আলাদা

কল্পবিজ্ঞান থেকে প্রাচীন বিজ্ঞান সমস্ত ধরণের জনপ্রিয় বিজ্ঞানের লেখায় ভরা এই এই কৌতূহল। আছে বিভিন্ন রকম এর বিষয়। নানান রকম নতুন নতুন প্রযুক্তির খবরা-খবর। বিজ্ঞান এর ইতিহাস।

পড়ুন যেমন খুশি, যখন খুশি। পড়ান সবাই কে।

কৌতূহল হচ্ছে বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রুপ ব্লগ। বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী পাঠকেরা ইন্টারনেটে যাতে এক জায়গায় কিছু লেখা পড়তে পারেন সেই উদ্দেশ্যে এই কৌতূহল তৈরি। আপনিও যুক্ত হতে পারেন কৌতূহল-এর সাথে।

বিজ্ঞানকে সব মানুষের কাছে জনপ্রিয় করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলো গল্পের ছলে বলে সাধারণ মানুষকে বিজ্ঞানে উৎসাহী করা, মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করা। দুর্বোধ্য ভাষায় তত্ত্বকথা না বলে বিজ্ঞানকে সহজ করে বোঝানো, এই উদ্দেশ্যে নিয়েই পথ চলা শুরু আমাদের।

মতামত জানান কৌতূহল-এর প্রতিটি লেখা ও অন্যান্য বিষয় কে আরও উন্নত করতে।

কৌতূহল-এর কথা জানিয়ে দিন আপনার পরিচিতদের কাছে Facebook, Twitter, email-র মাধ্যমে। কিংবা মুখেমুখে। কৌতূহল-এর সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে আমাদের দরজা খোলা।

স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু


ছোটবেলায় গাছপালা দেখলেই পাতা ছেঁড়া,ডালপালা ভাঙ্গা প্রায় আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ আর পারলাম না,কারণ স্কুলের শিক্ষিকা একদিন বললেন যে,আমাদের যেমন হাত কাটা গেলে আমরা ব্যাথা পাই তেমনি গাছেরাও একই অনুভূতিতে সাড়া দেয়। কথাগুলো শোনার পর থেকে নিজের এই বদঅভ্যাস থেকে সরে তো আসলামই,অন্যদেরও দেখলে বকা দিতাম। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, হ্যাঁ, তিনিই বিশ্ববাসীকে প্রথমবারের মত জানিয়েছিলেন উদ্ভিদের মধ্যে আছে প্রানশক্তি। এটি প্রমাণের জন্যে তিনি ‘ক্রেস্কোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন,যা উদ্ভিদদেহের সামান্য সাড়াকে লক্ষগুণ বৃদ্ধি করে প্রদর্শণ করে।



আজ এখানে জগদীশ চন্দ্র বসুর আলাদা গুরুত্ব তুলে ধরতে চাই। তিনি যে শুধু বাঙালি তা নয়,তাঁর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশেরই ময়মনসিংহ শহরে ১৮৫৮ সালে ৩০শে নভেম্বের। তাঁর পিতার নাম ভগবান চন্দ্র বসু (জেলার তৎকালীন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট) এবং মায়ের নাম বামা সুন্দরী দেবী।



তাঁর শিক্ষাজীবনের ধাপগুলো শুরু হয় ফরিদপুরে,তারপর ১৮৬৯ সালে হেয়ার স্কুল,সেখান থেকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল। তিনি ১৮৭৫ ষোল বছর বয়সে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হোন। সেখান থেকে ১৮৭৭সালে অনার্স এবং ১৮৭৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি .এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৮৮০ সালে ভারত ছেড়ে লন্ডনে ডাক্তারি পড়ার জন্য মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তা বাদ দিয়ে ১৮৮১ সালে লন্ডন ত্যাগ করে কেম্ব্রিজে যান। ১৮৮৪ সালে কেম্ব্রিজ ক্রাইস্ট কলেজ থেকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ে ট্রাইপোস (কেম্ব্রিজের বিশেষ কোর্স) এবং একই সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এস.সি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরলেন।



১৮৮৫ সালে জগদীশ বসু প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করলেন। তিনি তাঁর মৌলিক গবেষণা কলেজের ল্যাবরেটরিতে শুরু করলেন। প্রথম জীবনে তিনি ইথার তরঙ্গ ও বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। তাঁর গবেষণার প্রথম সাফল্য ছিল বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাহায্যে সংকেত বা সংবাদ প্রেরণের সম্ভাবনা আবিষ্কার,যা এখন থেকে দেড়শত বছর আগের কথা !



আমরা যে এফএম বা রেডিওতে গানের মূর্ছনায় হারিয়ে যাই তার আবিষ্কারক হিসেবে কিছুদিন আগেও পুরো বিশ্ববাসী ইটালির বিজ্ঞানী মার্কোনিকেই জানত। কিন্তু ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত IEEE (Institute of Electrical and Electronics Engineers)এর প্রসিডিঙ্গে আমাদের জগদীশ বসুকে রেডিওর প্রকৃত আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কারণ,মার্কোনি তার আবিষ্কারে অনেক সূক্ষ্র যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছিলেন যার মধ্যে একটি হচ্ছে কোহেরার(২টি ধাতব পাতের মাঝে খানিকটা পারদ),যা ছিল রেডিও বা তারহীন সংকেত পাঠানোর প্রক্রিয়ার মূল বিষয়। মজার ব্যপার হচ্ছে এই কোহেরার এর প্রকৃত আবিষ্কারক স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, যা মার্কোনি বা তার সমসাময়িক বিজ্ঞানীরা কেউ স্বীকার করেনি। মার্কোনি বসুর তৈরি কোহেরারটি সামান্য পরিবর্তন করেছিলেন। বসুর কোহেরারটি ছিল U আকৃতির মত আর মার্কোনিরটি ছিল সোজা।

Fig. : Coherer designed by J.C. Bose


 Fig.: Coherer patented by Marconi




১৮৯৬ সালে জগদীশ চন্দ্র বসু অদৃশ্য আলোক সম্পর্কে লিভারপুলের ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের বক্তৃতা দেন। ঐ সময় যদি তিনি নিজের নামে বেতার যন্ত্র পেটেন্ট করতেন,তাহলে মার্কোনি না,তিনিই হতেন বেতার যন্ত্রের সর্বপ্রথম আবিষ্কারক। এরপর লন্ডনে রয়েল ইনস্টিটিউটে তাঁকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্যে আহবান করা হয়। তিনি তাঁর কোহেরারটি নিয়ে একটি নিবন্ধ রয়েল সোসাইটিতে পড়েছিলেন। তাঁর এই কোহেরারটি দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এক মাইল দূরের বাসভবনে সাংকেতিক চিহ্ন প্রেরণ করেছিলেন। ১৮৯৬ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় মৌলিক গবেষণার জন্য তাঁকে ডি .এস.সি উপাধি প্রদান করে।



এখন প্রশ্ন হল জগদীশ চন্দ্র বসু  নিজের নামে পেটেন্ট করেননি কেন ? ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথকে লিখা একটি চিঠিতে বলেন যে, ‘আমি যদি একবার টাকার মোহে পড়ে যাই তাহলে আর কোনদিন আর বের হতে পারব না।’ টাকার প্রতি তাঁর লোভ ছিল না বলেই তিনি পেটেন্ট নিজের নামে করেননি।



১৯৩৭ সালের ২৩ শে নভেম্বর জগদীশ চন্দ্র বসু তাঁর কর্মময় জীবন থেকে চিরবিদায় নিলেন। আমরা তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম উত্তরাধিকার সূত্রে পেলাম ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির।’ তিনি একজন সাহিত্যিকও ছিলেন। তাঁর লেখা ‘অব্যক্ত’ বাংলা ভাষায় একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এছাড়াও আমরা যে সায়েন্স ফিকশানগুলো পড়ে বিজ্ঞানকে নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুনভাবে চিন্তা করি,তার জনক হলেন জগদীশ চন্দ্র বসু। ১৮৯৬ সালে তাঁর লেখা প্রথম সায়েন্স ফিকশানটির নাম ছিল ‘নিরুদ্দেশের কাহিনী’।



স্যার নেভিল মট ১৯৭৭ সালে বসু সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন,"জগদীশ চন্দ্র বসু  তার সময় অপেক্ষা ৬০ বছর এগিয়ে ছিলেন"।.বিজ্ঞানে তাঁর অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ তিনিও রেডিও আবিষ্কারের অন্যতম জনক।


৫-১০ বছরের মধ্যেই আপনার কম্পিউটারে পেতে পারেন কয়েক লক্ষ গীগা-বাইটের মেমোরিডিস্ক!!!


চমকে উঠার মত কথা! কয়েক লক্ষ গীগা-বাইট মেমোরিডিস্ক কম্পিউটারে। আসলে বাস্তব তথ্যটা আরও চমকানোর মত।কারন সম্প্রতি আই.বি.এম এর গবেষকরা এমন একটি আবিস্কার করেছেন,তা যদি বাজারজাত করা যায় তবে কয়েক লক্ষ গীগা-বাইট মেমোরি আপনার কম্পিউটারে নয় মোবাইল সেটের ছোট মেমোরি কার্ডেও পাবেন।

আসলে মেমোরি ডিস্ক গুলো প্রতি নিয়তি ছোট হচ্ছে।মাত্র ২০-৩০ বছর আগে এক গীগা-বাইট মেমোরি একটি পুরো কক্ষে রাখতেহত আর এখন আমরা কয়েক হাজার গীগা-বাইট মেমোরি আমাদের কম্পিউটারে রাখি। এ আবিস্কারটাও সেই ধারাবাহিকতায় এসেছে।

আই.বি.এম এর গবেষকরা মাত্র ১২টা অনু ব্যবহার করে ১বিট কম্পিউটার মেমোরি জমা করেছেন।বর্তমানে যে সব হার্ডডিস্ক আমরা ব্যবহার করি সেগুলোতে ১বিট জমা করার জন্য প্রায় ১মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ অনুর দরকার।আর এই আবিস্কারটা করতে তারা পদার্থের প্রতি-ফেরোচুম্বকত্ব (Anti-ferromagnetic) ধর্মকে ব্যবহার করেছেন।তারা মাত্র ৯৮টি প্রতিফেরোচুম্বক অনু ব্যবহার করে “THINK” শব্দটির ASCII কোড কম্পিউটার মেমোরিতে জমা করেছেন।মানে তাদের ব্যবহার করা মেমোরি,বর্তমানে ব্যবহৃত মেমোরি থেকে প্রায় ১লক্ষগুন ছোট। এর মানে হল,বর্তমান থেকে প্রায় ১লক্ষগুন মেমোরি ডিস্ক বানানো সময়ের ব্যাপার মাত্র।কিন্তু তার পরও আরও ৫-১০ বছর সময় লাগতে পারে বলা হয়েছে কারন পদার্থের প্রতি-ফেরোচুম্বকত্ব ধর্মটি শুধু হিমাঙ্কের নিচেই কাজ করে।আশাকরি কেউ নিজের কম্পিউটারকে শুধু বেশি মেমোরির জন্য বরফের মধ্যে রেখে কাজ করতে চাইবেন না।তাই গবেষকরা আরও কিছু সময় চেয়েছেন আবিস্কারটিকে সাধারন তাপমাত্রায় ব্যবহার উপযোগি করার জন্য।তবে তারা এও বলেছেন হয়ত অনুর সংখ্যা আরও কিছু বাড়িয়ে দিয়ে কিছুদিনের মধ্যই আবিস্কারটিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ব্যবহার উপযোগি করা যেতে পারে।তাতেই বা মন্দকি,কয়েক লক্ষগুন না হয়ে কয়েক হাজার গুন হলেও আমারা আমাদের কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য কয়েক লক্ষ গীগা-বাইট মেমোরি ডিস্ক পেয়ে যাব এবং মোবাইলেই কয়েক হাজার গীগা-বাইটের মেমোরি পাব।

বাঁচুন হ্যাকিংয়ের বহুল পরিচিত একটি ফাঁদ থেকে


আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব বহুল পরিচিত এবং বহুল ব্যাবহৃত একটি হ্যাকিং পদ্ধতির সাথে। আপনার সবারই এ বিষয়ে কিছু ধারনা আছে। পদ্ধতি টি হলো “ফিশিং” অনেকে আবার একে অনেক নামে ডেকে থাকেন। এই পদ্ধতিটি বিশ্বের নামি দামী হ্যাকাররাও ব্যাবহার করে থাকে। এই ফাঁদে পা দেওয়া অনেক সহজ। আপনার অজান্তেই হ্যাক হয়ে যাবে আপনার একাউন্ট।

এই পদ্ধতিতে মূলত মূল সাইটের মতো করেই হুবহু আরেকটা নকল সাইট তৈরি করা হয়। এই নকল সাইটে লগিন করলেই আপনার পাসওয়ার্ড চলে যাবে হ্যাকার দের হাতে। আপনারা অনেকেই হয়তো পা দিয়েছেন এই ফাঁদে।
পিশিং সাইট যেভাবে তৈরি করা হয়:
এ ধরনের সাইট তৈরি করতে হ্যাকাররা প্রথমে মুল সাইটের মতো করে আরেকটা সাইট তৈরি করে। নকল সাইট বানাতে তারা ঐ সাইটের লগিন পেজ মানে হোম পেজের HTML কোড বের করে। কোন পেজের HTML কোড বের করার বিভিন্ন সফটওয়্যার ও অনলাইন টুল আছে। তারপর তারা ঐ পেজের লগিন এরিয়াকে মেইল সেন্ডারে রুপান্তরিত করে (যেটাকে আমরা নিজেদের সাইটে email to admin হিসেবে ব্যাবহার করে থাকি)।. তারা ইউজার নেম এরিয়াকে মেইলের সাবজেক্ট ও পাসওয়ার্ড এরিয়াকে মেইলের মুল অংশ এবং লগিন বাটন কে সেন্ড বাটন হিসেবে সেট করে। এখন সাইট টিতে লগিন করলেই আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড চলে যাবে হ্যাকারদের ইমেইলে।
যেভাবে পিশিংয়ের ফাঁদে ফেলা হয়:
ধরুন আপনার যে ইমেইল ঠিকানা দিয়ে ফেসবুক বা অন্য কোন সাইটে রেজিষ্টেশন করা আছে। ঐ মেইলে আপনি ফেসবুক আপডেট পান। হ্যাকাররা ঠিক একই ধরনের মেইল লিখে আপনার মেইল ঠিকানায় পাঠাবে নকল সাইটের ইউ আর এল দিয়ে। তখন আপনি ওখানে ঢুকে লগিন করলেই আপনার নাম ও পাসওয়ার্ড পাচার হয়ে যাবে।
ফিশিং থেকে বাঁচবেন যেভাবে:
1. অপনি নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি মূল সাইটে লগিন করছেন। এজন্য সাইটের URL চেক করে নিন।
2. আপনার পাসওয়ার্ড ও নাম সেভ করা থাকলে। আপনার ব্রাউজার একমাত্র আসল সাইটেই তা প্রদর্শন করবে।

জনপ্রিয়তা না পাওয়া গুগলের কয়েকটি সার্ভিস ও পন্য


গুগল এবং এপল সাধারনত নতুন কোন সার্ভিস বা পন্য বাজারে ছাড়লেই প্রযুক্তির দুনিয়ায় ঝড় তুলে ব্যপক জনপিয়তা অর্জন করে। তবে কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়। গুগলের এমন কিছু সার্ভিস আছে যেগুলো নিয়ে গুগল এবং পুরো প্রযুক্তি দুনিয়া অনেক আশাবাদী ছিল। কিন্তু সব কিছু মিথ্যা প্রমানিত করে সেগুলো চলে গেছে কথোপকথনের আড়ালে। গুগলের এমন কয়েকটি সার্ভিস সম্পর্কে চলুন জানা যাক।


Google Wave
ইন্টারনেট ব্যবহারের ধারা পরিবর্তন করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে আবির্ভাব হয় গুগল ওয়েভের। ই-মেইল ব্যবহারের ধরনেরও পরিবর্তন হবে গুগল ওয়েভের মাধ্যমে এমনটি বলেছিল গুগল। তবে এটি কি দিতে পেরেছে এবং এর বর্তমান পরিনতি সম্পর্কে আমরা সবাই জানি
Google Buzz
জি-মেইলের মধ্যে অন্তর্তভুক্ত গুগলে বাজ এর ধারনাটা কিন্তু মন্দ ছিলনা। ফেইসবুক, টুইটার অথবা ইয়াহু! এর সাথে এর প্রতিযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এটি ফেইসবুক বা টুইটারের বিকল্প কিছু নয়। আবার অনেকেই চাননা তাদের জি-মেইলের কন্টাক্টগুলো একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কের কন্টাক্টে পরিনত হোক।
Nexus One
সম্ভবত এপলের iPhone এর সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্য গুগল বাজারে নিজস্ব ফোন ছাড়ার ঘোষনা দেয়। কিন্তু আইফোনের সাথে এটি কোন প্রতিযোগীতায় আসা তো দুরের কথা, নিজের বাজার ধরে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে। তারা যতটা আশা করেছিল তার চাইতে ৭০% কম বিক্রি হচ্ছে নেক্সাস ফোন। এর ভবিষ্যত সম্পর্কেও নতুন করে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।
Google Answer
২০০২ সালে শুরু করে ২০০৬ সালে বন্ধ করে দেয়া এই সার্ভিসটি সম্পর্কে অনেকে হয়তো জানেই না। এখানে কোন প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়ার জন্য $2 থেকে $200 পর্যন্ত দেয়া লাগতো। আশা করি বুঝতেই পারছেন এটি কেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
Orkut
ফেইসবুক, মাইস্পেস, টুইটার ব্যবহারকী অনেকেই অর্কুট এর নাম শোনেনি এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। ইন্টারনেট দুনিয়া কখনোই এটিকে খুব একটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি। আর গুগলও সম্ভবত এটিতে খুব একটা মনযোগ দেয়নি। আর যখন দিয়েছে ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

রাতের আকাশ ও তারা পরিচিতি


সেই সে অতি প্রাচীন কাল থেকেই আকাশের তারাদের দিয়ে নানা প্রকারের ছবির কল্পনা করেছে মানুষ। আদি কালের যাযাবর জাতীর যাযাবর লোক খোলা আকাশের নিচে তাদের পালিত গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি রাতের পর রাত পাহারা দিতে দিতে আকাশে ফুটে থাকা অসংখ্যা অগুনিত তাঁরাদের দেখে দেখে এঁকেছে তাদের কল্পনার ছবি তাঁরাদেরই নিয়ে। নিজেদের আকা তাঁরাদের সেই সব ছবি নিয়ে দিনের বেলা হয়তো তারা কত গল্প করতো।

রাতের আকাশের তাঁরার মেলাতেই দেখা দিয়েছে তাদের মেষ, বৃষ। যাযাবর যুবকের চোখে তার প্রিয়াও তাঁরাদের মাঝেই স্থান করে নিয়েছে, শস্য চয়নরতা কন্যারাশি তারই স্বাক্ষী।আরো আছে মিথুন রাশি। কিন্তু কিভাবে শুরু হয়েছিলো ছবি আকার এই খেলা তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো কোনো এক যুবক রাতের বেলা তাঁরাদের নিয়ে ছবি এঁকেছে আর পরদিন আবার তার বন্ধুদের ডেকে দেখিয়েছে। সেই বন্ধুরাও হয়তো আবার নিজেদের মত করে অন্য তাঁরাদের নিয়ে ছবি এঁকেছে। এমনি ভাবেই হয়তো এক জন থেকে আরেক জনে, এক দল থেকে আরেক দলে, এক বংশ থেকে আরেক বংশে, এক যুগ থেকে অন্য আরেক যুগে তাঁরাদের ছবি প্রচলিত হয়ে আসছে। আর সেইসব ছবিই আজ আধুনিক জ্যোতিবিদ্যার বইয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। যারা এই ছবি এঁকেছিলো তারা কবেই বিলিন হয়ে গেছে সময়ের গর্ভে কিন্তু তাদের আকা সেই সব ছবি হাজার হাজার বছর ধরেও পরিবর্তন হয়নি। কেউ জানেনা কখন কে কোন ছবিটি কল্পনা করেছিলো, কিন্তু আজো তাদের সেই নিদৃষ্ট তাঁরাদের দিয়েই সেই একই ছবি কল্পনা করা হচ্ছে। এমনি ভাবেই হাজার হাজার বছর ধরে প্রতিটি তারার ছবি সেই একই রয়ে গেছে, কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অতি আদিম কাল থেকেই মানুষ যে রাতের তাঁরা ভরা আকাশের মোহে আকৃষ্ট হয়েছে তার প্রমাণ মিলে গুহামানবের গুহায় তাঁরাভরা আকাশের ছবি দেখে। আগেই বলেছি প্রাচীন কালের মানুষেরা তাঁরাদের নিয়ে আলোচনা করেছে, তাঁরার সাথে তঁরা মিলিয়ে নানান ধরণের ছবি কল্পনা করেছে। প্রতিটি সভ্যতার মানুষেরাই তাঁরাদের নিয়ে এই আলোচনা জারী রেখেছে। তারা তাঁরাদের সেই কাল্পনিক ছবিকে কেন্দ্র করে তৈরি করেছে নানান ধরনের গল্প-কাহিনী, আবার কখনোবা তাদের মাঝে প্রচলিত কোনো গল্প-কাহিনীকে কেন্দ্র করেই আকাশের তাঁরাদের নিয়ে ছবি কল্পনা করেছে। সভ্যতাগুলি যখন আরো পরিপক্ক হয়েছে তখন তারা ধীরে ধীরে ঝুঁকেছে জ্যোতিষশাস্ত্রের দিকে, আর এই জ্যোতিষশাস্ত্র থেকেই জন্ম হয়েছে আমাদের আজকের আধুনিক জ্যোতিবিজ্ঞানের।
প্রচীন মানুষের কল্পনা করা তাঁরার ছবি আধুনিক জ্যোতিবিজ্ঞানও মেনে নিয়েছে। কিন্তু খুবই আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে – প্রাচীন সভ্য দেশগুলির কল্পনাকরা তাঁরার ছবি গুলির মধ্যেকার মিল গুলি। রাশিচক্রের বারোটি রাশির নাম ও গঠন প্রতিটি প্রাচীন দেশে প্রায় একই ছিলো এবং আধুনিক জ্যোতিবিজ্ঞানে সেগুলি আজো একই নামে পরিচিত।
আমাদের রাশিচক্র
পৃথিবী সূর্যের অন্যান্য গ্রহগুলির মতই সূর্যকে প্রদক্ষিন করছে। আমরা পৃথিবীর মানুষেরা পৃথিবীর এই ভ্রমণ বেগ বুঝতে পারিনা, বরং সূর্যকেই আকাশ পথে চলতে দেখি। সূর্যকে দিনের বেলে আকাশে একটি বৃত্তাকার পথে চলতে দেখা যায়। সূর্যের এই আপাত ভ্রমণ বৃত্তপথকে প্রাচীন প্রতিটি জাতী বারটি ভাগে ভাগ করেছে। কোনো দেশই বারোর কম বা বেশী ভাগে ভাগ করেনি। কোথায় গ্রীস আর কোথায় আমাদের ভারতবর্ষ, আর কোথাইবা মিসর। এই সমস্ত দূর দেশের মাঝে যখন যোগাযোগের কোনো সুযোগই ছিলো না তখন এই আশ্চর্য মিল সত্যিই অদ্ভূত মনে হয়, মনে হয় অলৌকিক কিছু রয়েছে এর পিছনে। যার ব্যাখ্যা আজো মেলেনি।
সূর্যপথের এই বারটি ভাগের বারটি নাম রয়েছে এবং এই বারটি অংশেই বারটি ছবি কল্পনা করা হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র চীন ছাড়া, গ্রীস, মিসর, ক্যালডিয়া, আরব, ভারতবর্ষ প্রভৃতি দেশে এ বারটি অংশ এবং এদের নাম হুবুহু একই ছিলো এবং আছে, তাছাড়া তাদের ছবিও প্রায় একইরূপ। সূর্যপথের বারভাগের প্রতিটি ভাগকে রাশি বলে আর তাই সূর্যের ভ্রমণ পথকে রাশি চক্রও বলা হয়।
রাশিচক্রের বারটি রাশি
রাশিচক্রের রাশিগুলোর মধ্য দিয়ে সূর্যের আপত গতি।
বাংলা নাম >>> পাশ্চাত্ত্য নাম >>> রাশির ছবি
১. মেষ >>>>>এরিস >>>>>>> ভেড়া।
২. বৃষ >>>>> টরাস >>>>>>> বলদ।
৩. মিথুন >> >জেমিনী >>>>>> নর-নারী।
৪. কর্কট >>>> ক্যান্সার >>>>> কাঁকড়া।
৫. সিংহ >>>> লিও >>>>>> সিংহ।
৬. কন্যা >>>> ভার্জো >>>>>> কুমারী মেয়ে।
৭. তুলা >>>>লিব্রা >>>>>>> নিক্তি।
৮. বৃশ্চিক >>>স্করপিও >>>>>> কাঁকড়া বিছা।
৯. ধনু >>>>>স্যাজিটারিয়াস >>> ধনুক।
১০. মকর>>>>ক্যাপ্রিকর্নস >>>>> ছাগল।
১১. কুম্ভ >>>>একোয়ারিয়াস >>>> কলস।
১২. মীন >>>> পিসেস >>>>>>>> মাছ।


প্রাচীন কালের লোকদের কাছে রাশিচত্রের তাঁরামণ্ডলিগুলি ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেই সময় এই রাশি চক্রের উপর চাঁদ আর সূর্যের অবস্থান দেখেই মাস-ঋতু-বছর হিসাব করা হতো। প্রতি মাসেই সূর্য এক রাশি থেকে আরেক রাশিতে সরে যায়, ফলে সূর্য কোন রাশিতে তা দেখে সহজেই বুঝা যায় তখন কোন মাস চলছে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সূর্য কোন রাশিতে অবস্থান করছে তা বুঝবো কি করে!! দিনের বেলাতো সূর্যের আলোতে কোনো তাঁরাই দেখা যাবে না, তাহলে উপায়? উপায় অবশ্যই আছে, মোটামুটি সকলেই আমরা জানি পূর্ণিমার রাতে চাঁদ থাকে টিক সূর্যের উল্টো দিকে। ফলে তখন চাঁদ যে রাশিতে থাকবে সূর্য থাকবে তার পরের ঠিক সপ্তম রাশিতে। ধরা যাক কোনো পূর্ণিমা রাতে আমরা দেখতে পেলাম চাঁদ রয়েছে মকর রাশিতে তাহলে সেই সময় সূর্য থাকবে কর্কট রাশিতে। কিন্তু এই পদ্ধতির একটি সমস্যা হচ্ছে, এর জন্য আপনাকে পুরো এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। তবে আরো একটি সহজ উপায়ে আপনি প্রতি দিনই জেনে নিতে পারেন সূর্য কোন রাশিতে আছে।
মহাকাশের প্রতিটি তাঁরা, তাঁরামণ্ডলি, সূর্য ইত্যাদি জ্যোতিষ্কই ২৪ঘন্টায় এক বার মধ্যগমন করে। মধ্যগমন হচ্ছে-ঠিক মাঝ আকাশে অবস্থান করা। যা বলছিলাম- আমাদের সূর্য মধ্যগমন করে ঠিক দুপুরে। সুতরাং সূর্যের ঠিক উল্টো দিকের রাশিটি মধ্যগমন করবে ঠিক মাঝ রাত্রিতে। ফলে ঠিক মাঝরাত্রিতে রাশিচক্রের যে রাশিটি মধ্যগমন করবে তার আগের ঠিক সপ্তম রাশিতেই সূর্য সেই দিনের বেলাতে অবস্থা করেছিলো। তাই চাইলেই একজন লোক প্রতিদিন রাতেই দেখে নিতে পারি সূর্যের অবস্থান কোন রাশিতে। এভাবেই মূলতো প্রাচীন কালের লোকেরা হিসাব রাখতো।

 
back to top