এটি সত্যিই কিছুটা অবাক করার মত যে, এমন কিছু রয়েছে যেটা একটি পিস্তলকে নিরব করতে পারে। তবে পিস্তলে সাইলেন্সার ব্যবহারের বিষয়টি আসলে খুব একটা অবাক করার মত কিছু নয়। এটি খুবই সহজ একটি নীতি অনুসরন করে কাজ করে। একটি ছোট উদাহরন দিলে কিছুটা ধারনা নেয়া যাবে। মনে করুন, আপনি একটি বেলুন পিন দিয়ে ফুটো করে দিলেন। তখন এটি প্রচন্ড শব্দে বিস্ফোরিত হবে। কিন্তু যদি আপনি এর মুখের দিকটি খুলে দেন, তাহলে এটি থেকে বাতাস আস্তে আস্তে বের হয়ে যাবে এবং খুব একটা শব্দ করবে না। পিস্তলের সাইলেন্সার এর পিছনে এই মৌলিক ধারনাটিই মুলত কাজ করে।
পিস্তল থেকে একটি বুলেট নিক্ষেপ করার সময় বুলেটের পেছনে থাকা গান পাউডার সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটি খুবই উচ্চ চাপের গরম গ্যাসের একটি তড়িৎ প্রবাহ তৈরি করে যা বুলেটটিকে ব্যারেল দিয়ে তীব্র গতিতে বের করে দেয়। বুলেটটি যখন ব্যারেল থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে যায়, তখন ব্যপারটি দাঁড়ায় অনেকটা বোতল থেকে কর্কের ছিপি খুলে দেয়ার মত। অর্থাৎ বুলেটের পেছনে থাকা গ্যাস তীব্র গতিতে বের হওয়ার ফলে ভয়াবহ শব্দের তৈরি হয়।
সাইলেন্সার যুক্ত করা পিস্তলে মুলত বুলেটটি বেরিয়ে যাবার পর, চাপযুক্ত গরম গ্যাস কিছুটা প্রসারিত হওয়ার জায়গা পায়। ফলে এটির চাপ অনেকটাই কমে যায় এবং যখন বুলেটটি বেরিয়ে যায়, তখন এর শব্দ হয় অনেক কম। তবে এই সাইলেন্সার কিন্তু পিস্তলের শব্দকে পুরপুরি নিয়ন্ত্রন করতে পারে না। কিছুটা ভোতা হালকা একটি শব্দ হয়।
অনেকের মতে সুপারসনিক স্পীডে(শব্দের চেয়ে দ্রুত গতি) ছোটা বুলেটের শব্দকে সাইলেন্সার মোটেই কমাতে পারেনা। কারন এই ধরনের বুলেট ব্যারেল থেকে বেরিয়ে যাবার পর গতির কারনে এক ধরনের শব্দ তৈরি হয় যা নিয়ন্ত্রন করা যায় না। কারন সাইলেন্সার শুধুমাত্র বুলেট বেরিয়ে যাবার সময় সৃস্টিকারী শব্দ নিয়ন্ত্রন করতে পারে, বাতাসের মধ্য দিয়ে বুলেটের ছুটে যাবার শব্দকে নয়।